Thursday, April 19, 2012

শেষ স্বপ্ন

বাইপাসের ধারে
রাতজাগা পাখি ডাকে সুতীব্র স্বরে|
ভ্যাট-এর উচ্ছিষ্টভোজী কুকুরগুলো
একটা রুটির টুকরো নিয়ে মারপিট করে ম'লো!

লাস্ট বাস চলে যায়
ঘুমের দেশে পথচারী কিছু যাত্রী নিয়ে|
রোজকার মত ভিখারীটা
ওলটপালট করে ঝুরিটা আকাশপানে চেয়ে!
গাল দেয়, শাপ দেয়;
তবু যেন বদলাতে চায়না বেয়ারা আকাশটা,
কেবলই ওই সুদূর থেকে
শাপশাপান্তের ব্যুমেরাঙ্গ ছুঁড়ে মারে -
আর বখাটে ছেলেদের মত হাসে -
তার দুর্ভাগ্যের দিকে তাকিয়ে!
তারপর...

ঘুমের যাদুকর শুরু করে তার যাদুকরী খেলা
পলকে
ভিখারীটা পৌঁছে যায়, সামনে এক মেলা
কত আশা, কত নিরাশা
আহুত হয় সেথা পসরার ডালী ভরে ভরে|
লোকে আসে-দেখে-কেনে,
নিয়ে যায় যে যার নিজের ঘরে|
সেও কেনে, দেখেনা;
ফুটপাথে এসে থলিটা উপুর করে ঢালে|
ভরে যায় মেঝেতে
রাশি রাশি...!

চলে যায় মারুতিটা,
পরে থাকে দেহটা;
ব্যার্থতার কালিমাখা মুখে|

Sesh Shopno

Sunday, April 15, 2012

পয়লা বৈশাখ আর এক গুচ্ছ স্মৃতি

আজ পয়লা বৈশাখ| চারপাশে রবীন্দ্রসঙ্গীত, হালখাতা, লক্ষ্মী-গণেশ পূজো ও আরও নানান রকম আয়োজন| আর অবিছ্যেদ্য ভাবে সকাল থেকে একের পর এক ফোন আসছে বা যাচ্ছে| বন্ধুদের সাথে শুভেচ্ছা প্রদানটা মেসেজ-এই সেরে ফেলা যায়, কিন্তু আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সরাসরি ফোন-এ কথা বলাটাই রীতি| আজ অফিস ছুটি, তাই বাড়িতেই সারাদিন কাটাচ্ছি| এসব কিছুর মাঝে কী যেন একটা নেই মনে হচ্ছে, কী যেন একটা দামী কিছু হারিয়ে গেছে জীবন থেকে - বারবার এটাই খালি মনে হচ্ছে!

চিঠি! হ্যাঁ, চিঠি, শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা বার্তাবাহী চিঠি| যবে থেকে লিখতে শিখেছি তবে থেকে সবথেকে আগ্রহের বিষয়বস্তু ছিল চিঠি লেখা| অপোক্ত কাঁচা হাতে ধরে ধরে খুব যত্নে একটা একটা করে চিঠি লিখে ফেলতাম সব্বাইকে - কাকামনি, কাকিমা, বড়মা, ছোড়দি, বড়দি, দাদাভাই, ঠাকুমা; এদেরকে| যাতে চিঠিগুলো একদম পয়লা বৈশাখেই পৌছয়, তাই বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই লেখার কাজটা সেরে ফেলতাম আর বাবা গিয়ে পোস্টবক্সে ফেলে আসতো| নববর্ষের সারা দিনটাই প্রায় কুড়ি বার সদর-দরজার বাইরে লাগানো পোস্টবক্স-এ উঁকি দিয়ে কেটে যেত|

অবশ্যই এক গুচ্ছ চিঠি পেতাম| যদিও জানি যে সেদিন রাতে সবাই মিলে কারুর একটা বাড়িতে একসাথে জড় হয়ে হইচই, খাওয়া দাওয়া হবে এবং দেখাও হবে, তবুও ওই চিঠি লেখার এবং পাওয়ার আনন্দটা ছাড়তে পারতাম না কিছুতেই| পিসীমনিরা সবাই কোচবিহারে থাকে, তাই ওদের চিঠিগুলো অনেকটা আগেই সেরে ফেলতে হত| পিসতুতো দাদা-দিদিদের চিঠিও আসতে কখনোসখনো দেরী হত| কিন্তু সব মিলিয়ে ভারী মজা ছিল ওই দিনগুলোয়|

আজ forwarded sms-es আর electronic wishes n greetings -এর মধ্যে কেন জানিনা ওই উত্তেজনাটা আর কিছুতেই ফিরে পাইনা!


Saturday, April 14, 2012

Balance Sheet

বাড়ছে বয়স, কমছে আয়ু|
বাড়ছে দূষণ, কমছে বায়ু||

বাড়ছে নাশ, সৃষ্টি হ্রাস|
বাড়ছে ক্ষুধা, অরণ্য গ্রাস||

বাড়ছে যান, বাড়ছে গাড়ি|
কমছে জমি, বাড়ছে বাড়ি||

বাড়ছে পশু, কমছে মানুষ|
বাড়ছে নানান রঙ্গিন ফানুস||

কমছে স্নেহ, বাড়ছে ত্রাস|
কমছে ভালোবাসার বাস||

বাড়ছে প্রেশার, মন্দ রোগ|
কমছে শুভ বিবাহযোগ||

সংসারের এই ব্যালান্স-শীট-এ,
পেলে কি খুঁজে লাভকে নীটে?


Balance Sheet of Life

(P.S. ক্লাস 6-এ লেখা কবিতা) :-P

Friday, April 13, 2012

একটি গাছ আর একটি পুকুর

গাছের শেষে পুকুর

ক্ষণে ক্ষণে ঝুঁকে
স্পর্শ করছে বুক,
স্পর্শসুখের উল্লাস
ছোট ছোট ঢেউ|
ভাঙ্গছে পাড়, খেলাচ্ছলে
হাওয়ার মাতন উড়ো পাতা
টুপটাপ খসে পড়া তোমার
আমাকে দেওয়া উপহার|

রোদ-জল-বায়ু
তোমার বাস্পবারি সোহাগে
উচ্ছল|
মুঠো চুলে হাওয়ার কাঁপন
চুপি চুপি
দুটো কথা - ভাঙ্গা ডাল
এতটুকু ফাঁক আর
দুর্নিবার আকর্ষণ|

পুকুর পাড়ের গাছ

কী কথা কুলকুল
বওয়| অবুঝ মন জানে
না, তোমার অতল
রহস্যমাখা শরীর, মানে
নিদ্রিত রাত্রি, চাঁদে মুখ
দেখে আয়নায় - সুন্দর!
আমি দেখি তোমার
জোয়ার জাগা শরীর -
শিহরণ|

ছিঁড়ে যায় কোষ
স্নায়ু অসহ্য ক্রোধে
কার দুর্জয় সাহস?
তোমার কৌমর্যো অপহৃত
গভীর শরীরে আজ
অগভীরতা মাটির বোঝা!
আমার উপহার তোমাকে -
ঝরা পাতা - আজ
ভাসে কই?
চারিদিক নিস্তব্ধ কান্নায়
বোজা গলা তোমার,

আমার আজন্ম প্রেম
প্রস্তরীভূত আজ!

Ekti Gaach Aar Ekti Pukur