আজ পয়লা বৈশাখ| চারপাশে রবীন্দ্রসঙ্গীত, হালখাতা, লক্ষ্মী-গণেশ পূজো ও আরও নানান রকম আয়োজন| আর অবিছ্যেদ্য ভাবে সকাল থেকে একের পর এক ফোন আসছে বা যাচ্ছে| বন্ধুদের সাথে শুভেচ্ছা প্রদানটা মেসেজ-এই সেরে ফেলা যায়, কিন্তু আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সরাসরি ফোন-এ কথা বলাটাই রীতি| আজ অফিস ছুটি, তাই বাড়িতেই সারাদিন কাটাচ্ছি| এসব কিছুর মাঝে কী যেন একটা নেই মনে হচ্ছে, কী যেন একটা দামী কিছু হারিয়ে গেছে জীবন থেকে - বারবার এটাই খালি মনে হচ্ছে!
চিঠি! হ্যাঁ, চিঠি, শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা বার্তাবাহী চিঠি| যবে থেকে লিখতে শিখেছি তবে থেকে সবথেকে আগ্রহের বিষয়বস্তু ছিল চিঠি লেখা| অপোক্ত কাঁচা হাতে ধরে ধরে খুব যত্নে একটা একটা করে চিঠি লিখে ফেলতাম সব্বাইকে - কাকামনি, কাকিমা, বড়মা, ছোড়দি, বড়দি, দাদাভাই, ঠাকুমা; এদেরকে| যাতে চিঠিগুলো একদম পয়লা বৈশাখেই পৌছয়, তাই বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই লেখার কাজটা সেরে ফেলতাম আর বাবা গিয়ে পোস্টবক্সে ফেলে আসতো| নববর্ষের সারা দিনটাই প্রায় কুড়ি বার সদর-দরজার বাইরে লাগানো পোস্টবক্স-এ উঁকি দিয়ে কেটে যেত|
অবশ্যই এক গুচ্ছ চিঠি পেতাম| যদিও জানি যে সেদিন রাতে সবাই মিলে কারুর একটা বাড়িতে একসাথে জড় হয়ে হইচই, খাওয়া দাওয়া হবে এবং দেখাও হবে, তবুও ওই চিঠি লেখার এবং পাওয়ার আনন্দটা ছাড়তে পারতাম না কিছুতেই| পিসীমনিরা সবাই কোচবিহারে থাকে, তাই ওদের চিঠিগুলো অনেকটা আগেই সেরে ফেলতে হত| পিসতুতো দাদা-দিদিদের চিঠিও আসতে কখনোসখনো দেরী হত| কিন্তু সব মিলিয়ে ভারী মজা ছিল ওই দিনগুলোয়|
আজ forwarded sms-es আর electronic wishes n greetings -এর মধ্যে কেন জানিনা ওই উত্তেজনাটা আর কিছুতেই ফিরে পাইনা!
No comments:
Post a Comment