প্রচন্ড গরম! সবাই চারপাশে হাঁসফাঁস করছে! ট্রেন-বাস-অটোএ প্রত্যেকটা মানুষ একটু মন জুড়িয়ে দেওয়া ঠান্ডা হাওয়ার জন্যে হাপিত্যেস করে বসে আছে| অথচ কোথায় সেই শীতল সমীরন? কোথায় গেল ঈশান-কোণ অন্ধকার করা কালবৈশাখীর ঘন করাল মেঘ?
আমার অফিস-বাড়ি যাতায়াতে ট্রেন একটা অপরিহার্য অঙ্গ| সকালের ট্রেনে সফরটাকে যদিও বা তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ বলা যায়| বা সেটা বললেই শুনতে ঠিক লাগে| আর ফেরার পথে যাদবপুর - বালিগঞ্জ এবং বালিগঞ্জ - দমদম (বজবজ-নৈহাটি) এ এক ভারী আরামদায়ক ক্ষণ| উঠেই সোজা গিয়ে দরজার পাশে দাঁড়াই যাতে পুরো রাস্তাটা ফুরফুরে হাওয়া খেতে খেতে এবং গান শুনতে শুনতে যাওয়া যায়| এই দমবদ্ধ করা গরমে এ এক স্বস্তি|
আগের সপ্তাহেও এমনই ট্রেনে দরজার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম| ট্রেন স্যার গুরুদাস হল্ট স্টেশন-এ দাঁড়াতেই হুড়োপাটি করে লোকজনের নামা-ওঠা হল| এজ মধ্যবয়সী মহিলা (daily passenger) উঠেই মধ্যিখানের রড ধরে মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে পড়লেন| মনে হল, শরীর খুব অসুস্থ| কিন্ত জানি উনি পরের স্টেশন, বিধাননগর-এই নেমে যাবেন এর পরের বনগাঁ লোকাল ধরবেন বলে, তাই ওনাকে ভিতরে ঢুকে বসার কথা বললাম না| ওনার বাকি সহযাত্রীদের আলাপ আলোচনা থেকে জানতে পারলাম - ওনার বাড়িতে পাখা নেই| মানে electricity connection নেই| ওনার High Blood Pressure, তাই এই গরমে সারা রাত ঘুম হয়না| উনি কলকাতায় এক বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন| থাকেন বারাসত-এর ও অনেক স্টেশন পর| হঠাত্ দেখলাম উনি নীরবে কাঁদছেন| শরীর বেশি খারাপ হলে যদি কাজে আসতে না পারেন তাহলে যে একদিনের মাইনে কাটা যাবে ওনার!
No comments:
Post a Comment